স্মার্টফোন কেনার সময় অবশ্যই মাথায় রাখবেন এই 12 বিষয়

স্মার্টফোন কেনার সময় অবশ্যই মাথায় রাখবেন এই 12 বিষয়
HIGHLIGHTS

স্মার্টফোন কেনার সময় কী কী বিষয় মাথায় রাখা উচিত

স্মার্টফোন কেনার সময় সবার আগে ঠিক করতে হবে আপনি কত খরচ করতে চান

কেনার আগে বুঝে নিতে হবে ফোন ব্যবহার করে আপনি কী কী কাজ করবেন

আমাদের প্রতিদিনের কাজকর্মের সাথে এখন যে জিনিসটি সবসময় জড়িয়ে রয়েছে তা হল স্মার্টফোন। এই ওয়ার্ক ফ্রম হোমের যুগে ল্যাপটপের পাশাপাশি মোবাইলও আমাদের বেশ বড়োসড়ো ভরসার জায়গা। অনেকসময় বাড়িতে থেকে অনলাইন ক্লাস করবার জন্যেও অলটারনেটিভ একটি ফোন কেনার দরকার পড়ে। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা মোবাইল গেম খেলতে ভালোবাসেন। আবার অনেকেই শুধুমাত্র ফোন কল করবার জন্যই হ্যান্ডসেট ব্যবহার করেন।

প্রতি মাসেই টেক মার্কেটে লঞ্চ হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নতুন স্মার্টফোন মডেল। প্রতিটি কোম্পানিই কাস্টমারদের জন্য বিভিন্ন বাজেটের, দারুন স্পেসিফিকেশনের হ্যান্ডসেট হাজির করেছে। নতুন মোবাইল কিনতে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির এত মডেলের মধ্যে কোনটি কিনবেন, আপনি যদি কিছুতেই না বুঝতে পারেন, তবে আজকের এই প্রতিবেদন শুধু আপনার জন্য। আজ আমরা আপনাকে জানাবো যে, নতুন স্মার্টফোন কেনবার আগে অবশ্যই মাথায় রাখবেন কোন কোন বিষয় । আসুন দেখে নিন-

1. কত বাজেট-

নতুন স্মার্টফোন সিলেক্ট করবার আগে আপনাকে যে বিষয়টির দিকে সবার আগে নজর দিতে হবে, তা হল বাজেট। মানে কত বাজেটের মধ্যে আপনি নতুন ফোন কিনতে চান। দামি হ্যান্ডসেট কিনে যাতে আপনাকে পরে আর্থিক সমস্যায় পড়তে না হয়, সেদিকে অবশ্যই নজর রাখবেন। আপনার মোবাইল কেনার বাজেট যদি 15,000 থেকে 20,000 টাকা হয়, তাহলে সেই রেঞ্জের মধ্যেই ফোন কিনবেন। মার্কেটে নতুন আইফোন মডেল লঞ্চ করেছে বলে আপনার সাধ্যের বাইরে গিয়েও কেনার আগ্রহ দেখাবেন না।

2. কি কাজে ব্যবহার করবেন-

আমরা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা কাজে স্মার্টফোনকে ব্যবহার করি । অনেকে হাই- গ্রাফিক্স গেম খেলার জন্য হ্যান্ডসেটকে ব্যবহার করেন। আবার অনেকেই ফোন কল রিসিভ করার মতন সাধারণ কাজে মোবাইলকে ইউজ করেন। আপনি যদি কেবল মেসেজ করা, কল করা বা ফেসবুক, টুইটার ব্যবহার করার জন্য নতুন ফোন কেনার কথা ভাবেন। তবে সেক্ষেত্রে নতুন মডেলের পিছনে বেশি টাকা খরচ করা উচিত নয়। আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া ব্লগার হন, কিংবা অনলাইনে ভিডিও গেমের স্ট্রিমিং করেন, তাহলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হাই- এন্ড স্মার্টফোনগুলিকে বেছে নিতে পারেন।

3. স্মার্টফোন কোন অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করছে –

সাধারণত স্মার্টফোনে Android এবং ios এই দুই রকমের OS বা অপারেটিং সিস্টেম দেখা যায়। ios হ্যান্ডসেটগুলি বেশ সিকিওর এবং হাই- এন্ড স্পেসিফিকেশন অফার করে থাকে। তবে এই মডেলগুলির ইন্টারফেস বেশ জটিল। তাই এই ফোনগুলিকে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রথম দিকে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে আপনি যদি উইন্ডোজ কম্পিউটার ব্যবহার করেন, তাহলে যে কোনো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলকে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।

4. ফোনে কি কি সিকিউরিটি ফিচার রয়েছে-

আজকাল বেশিরভাগ স্মার্টফোনেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, আইরিশ স্ক্যানার, ফেস লকের মতন সিকিউরিটি ফিচার থাকে। এই ফিচারগুলি মোবাইলকে আনলক করতে সাহায্য করে। ফোনের বিভিন্ন ফাইলের প্রাইভেসিকেও রক্ষা করে এই সমস্ত স্পেশ্যাল ফিচার । আজকাল 5,000 টাকা বাজেটের মডেলগুলিও আসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের সাথে। অন্যদিকে হাই এন্ড স্মার্টফোনগুলিতে আইরিশ স্ক্যানারের মতন সিকিউরিটি ফিচার পাওয়া যায়। তাই আপনার কাছে ডিভাইসের সিকিউরিটি যদি আসল কথা হয়, তাহলে হাই- এন্ড মডেলগুলি কিনতে পারেন।

5. মোবাইলের অডিও বা স্পিকার কোয়ালিটি কেমন-

আপনি যদি ভিডিও স্ট্রিমিং করেন, তাহলে আপনার হ্যান্ডসেটে অবশ্যই থাকা দরকার ভালো কোয়ালিটির স্পিকার। এই ধরনের ক্ষেত্রে আপনি এমন স্মার্টফোনকে বেছে নিতে পারেন যেগুলিতে রয়েছে ফ্রন্ট ফেসিং স্পিকার সিস্টেম।

6. মোবাইলে কি ধরনের ইউএসবি পোর্টের সাপোর্ট পাওয়া যাবে-

আজকাল বেশিরভাগ ফোনেই ইউএসবি টাইপ সি পোর্টের সাপোর্ট থাকে। তবে অনেক হ্যান্ডসেট রয়েছে যেগুলি নন- টাইপ সি পোর্টের সাথে আসছে। এই জিনিসগুলিকে ফোন কেনবার আগে দেখে নেওয়া উচিত।

7. কি ধরনের হেডফোন জ্যাক রয়েছে-

আজকাল বেশিরভাগ স্মার্টফোনেই রয়েছে 3.5mm হেডফোন জ্যাকের সাপোর্ট। এখনো পর্যন্ত এই ধরনের হেডফোন জ্যাককেই স্ট্যান্ডার্ড বলে মনে করা হয়। আগামীদিনে হ্যান্ডসেটগুলিতে হেডফোন জ্যাক হিসেবে টাইপ সি জ্যাক আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

8. বাড়িতে অন্যান্য কি কি ডিভাইস রয়েছে-

আপনার বাড়িতে যদি গুগল অ্যাসিস্টেন্ট, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট টিভি এবং উইন্ডোজ ডেস্কটপের মতন ডিভাইস থাকে, তাহলে আপনি Android ফোন দিয়েই এই স্মার্ট ডিভাইসগুলিকে খুব সহজেই কন্ট্রোল করতে পারবেন। তবে বাড়িতে ম্যাকবুক, আইপ্যাড বা Apple ব্র্যান্ডের বিভিন্ন গ্যাজেট থাকলে,ios স্মার্টফোনকেই বেছে নেওয়া উচিত।

9. স্মার্টফোনের ডিজাইন কেমন-

আপনি নিজের স্মার্টফোনের ডিজাইন কেমন চাইছেন, তা নতুন মোবাইল সিলেক্ট করার আগে ভেবে দেখে নেবেন । সাধারণত iPhone মডেলগুলি আসে বেশ স্টাইলিশ ডিজাইনের সাথে। তবে আপনি যদি বাজেটের মধ্যে স্মার্ট লুকের ফোন কিনতে চান, তবে অবশ্যই বেছে নিতে পারেন Redmi ব্র্যান্ডের যে কোনো Note সিরিজের মডেলকে। অন্যদিকে Realme ব্র্যান্ডের GT Master সিরিজের হ্যান্ডসেটগুলি আসছে বেশ দারুন ব্যাক সাইড ডিজাইনের সাথে।

10. স্মার্টফোনের বিল্ট কোয়ালিটি কেমন-

আজকাল বেশিরভাগ স্মার্টফোন বডি তৈরি হয় প্ল্যাস্টিক বা মেটাল দিয়ে। যদিও মার্কেটে এখন গ্লাস প্যানেলের হ্যান্ডসেট পাওয়া যায়, তবে এই ধরনের ফোনের সংখ্যা খুব কম। আপনার হাত থেকে যদি ঘন ঘন মোবাইল মাটিতে পড়ে যায় তাহলে আপনার জন্য প্লাস্টিক বা মেটালের হ্যান্ডসেট উপযুক্ত হবে।

11. ফোন খারাপ হয়ে গেলে কত তাড়াতাড়ি সারানো যাবে-

কোনো গ্যাজেট কখন যে খারাপ হয়ে যাবে, সে সম্পর্কে কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। তাই যে কোনো ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন কেনার আগে সেই কোম্পানির সার্ভিস সেন্টার আপনার এরিয়ার আশেপাশে কোথায় কোথায় রয়েছে তা ভালোভাবে দেখে নেবেন। Samsung ব্র্যান্ডের Fold এবং Flip সিরিজের হ্যান্ডসেট যদি একবার খারাপ হয়ে যায় তাহলে সেগুলিকে ঠিক করতে অনেকটা সময় লাগে। তেমনি Realme, Redmi ব্র্যান্ডের ফোনগুলিকে খুব সহজেই সারিয়ে নেওয়া যায়।

12. নতুন মোবাইলের অ্যাক্সেসরিজ কেমন পাওয়া যাবে-

স্মার্টফোনের অ্যাক্সেসরিজ বলতে চার্জার, হেডফোনের মতন ডিভাইসকে বোঝায়। এখন টেক মার্কেটে Xiaomi , OnePlus, Realme ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ খুব সহজেই পাওয়া যায়। অন্যদিকে Asus, মোটোরোলার মতন ব্র্যান্ড তেমন কোনো স্মার্টফোন অ্যাক্সেসরিজ অফার করে না।

Digit.in
Logo
Digit.in
Logo