মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ হয় কেন? কীভাবে বাঁচবেন জেনে নিন
বিভিন্ন কারণে মোবাইল ফোনে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে
ফোন ওভারচার্জ হয়ে গেলে ব্লাস্ট হতে পারে
সম্প্রতি OnePlus Nord2 মডেলের বিস্ফোরণের রিপোর্ট সামনে এসেছে
এখন প্রায়ই স্মার্টফোন ব্লাস্টকে কেন্দ্র করে একেরপর এক ঘটনা সামনে আসছে। কিছুদিন আগেই OnePlus ব্র্যান্ডের একটি Nord2 মডেলের বিস্ফোরণের রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়াও Samasung ব্র্যান্ডের Galaxy ডিভাইসগুলির বিভিন্ন সময় ব্লাস্ট করে যাওয়ার ঘটনাও বেরিয়ে এসেছে। যাদের সাথে এই ধরণের ব্যাপার ঘটেনি তাদের কাছে এমন দুর্ঘটনা খুব সাধারণ মনে হলেও, এমন বিপজ্জনক ইনসিডেন্টের ফলে ইউজারের লাইফ রিস্কও রয়েছে। বেশিরভাগ ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানিগুলি এই ধরনের ঘটনার জন্য ইউজারদের ভুল ব্যবহারের দিকে আঙ্গুল তুলে এড়িয়ে যায়। তবে সবসময় কিন্তু এমনটা হয় না। অনেক সময় কিন্ত ফোন মেকিং প্রসেসেও ভুল- ত্রুটি থাকে, যার ফল ভোগ করতে হয় গ্রাহকদের। আজ আমরা আপনাদের জন্য সামনে নিয়ে এসেছি এমন একটি প্রতিবেদন যার সাহায্যে আপনি জানতে পারবেন যে ঠিক কি কি কারণের জন্য স্মার্টফোনগুলি বিস্ফোরণের শিকার হয়। যা আপনাকে আগামী দিনে আরও একটু বেশি সচেতন থাকতে সাহায্য করবে।কি কি কারণে স্মার্টফোনের ব্লাস্ট হয়-
ম্যানুফ্যাকচারে গণ্ডগোল
বেশিরভাগ সময় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলির মোবাইল বিস্ফোরণের জন্য ইউজারের ভুল ব্যবহারকে দায়ী করলেও ডিভাইস তৈরির সময় গণ্ডগোল দেখা দিলে ব্লাস্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। কোনো স্মার্টফোনকে বিক্রির জন্য শিপিং করার আগে ব্যাটারিকে ভালো করে টেস্ট করে নেওয়া উচিত ব্র্যান্ডগুলির। বেখেয়ালে যদি কোনো ভুল কম্পোনেন্ট প্রবেশ করে যায় তাহলে কিন্তু পরে মোবাইল ইউজ করার সময় হিট- আপ হয়ে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
বারবার ফোন মাটিতে পড়ে গেলে
স্মার্টফোন বেশ কয়েকবার মাটিতে পড়ে গেলে কিন্তু ফোনের ব্যাটারির ওপর প্রভাব পড়তে পারে। ফোন ওপর থেকে পড়ে যাবার ফলে ডিভাইসের ইন্টারনাল মেকানিজমের ক্ষতি হয়। যার ফলে ওভার হিটিং, শর্ট সার্কিটের মতন ঘটনা দেখা দেয়।ব্যাটারি খারাপ হয়ে গেলে তাতে সোয়েলিং দেখা দেয় যা খুব কাছ থেকে ডিসপ্লে প্যানেলকে দেখলেই বোঝা যায়। এই সময়ে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে পুরনো ফোনকে বদলে ফেলাই উচিত।
থার্ড পার্টি চার্জার ব্যবহার করলে
ফোনের সাথে দেওয়া কোম্পানির নিজস্ব চার্জার ব্যবহার করলে মোবাইল ব্যাটারি ঠিক থাকে। তবে তার বদলে থার্ড পার্টি চার্জার ইউজ করলে ব্লাস্টের সম্ভাবনা থেকেই যায়। কেননা অন্য ব্র্যান্ডের চার্জার গুলি দামে কম হলেও ফোনের যে স্পেসিফিকেশনের দরকার পড়ে তা পূরণ করতে পারে না।
ফোন সারারাত চার্জ দিলে
আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই রাত্রে মোবাইল চার্জে বসিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। যার ফলে অনেকসময় ফোন ওভার চার্জ বা শর্ট সার্কিট হয়ে বিস্ফোরন ঘটায়। আজকাল বেশ কিছু প্রিমিয়াম রেঞ্জের ফোনে এমন কিছু চিপের ব্যবস্থা থাকে যেগুলি ডিভাইস 100% চার্জ হয়ে গেলে হ্যান্ডসেটের ইলেকট্রিক ফ্লো বন্ধ করে দেয়। তবে বাজেট ফ্রেন্ডলি মোবাইলগুলিতে এই সুবিধা পাওয়া যায় না।
ডিভাইসের প্রসেসর গরম হয়ে গেলে
হাই- গ্রাফিক্সের মোবাইল গেম খেলার ফলে ফোনের প্রসেসর গরম হয়ে যেতে পারে। যার ফলে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এই ধরনের সমস্যা থেকে বাঁচানোর জন্যই আজকাল ফোনে থার্মাল লক ফিচার নিয়ে আসা হয়েছে।
মোবাইলে সরাসরি সূর্যের আলো পড়লে
স্মার্টফোনে সরাসরি সূর্যের আলো পড়লে ফোনের সেলগুলো আনস্টেবেল হয়ে যায়। যার ফলে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মতন গ্যাস বেরোতে থাকে। এর ফলে মোবাইলের ব্যাটারিতে সোয়েলিং শুরু হয়ে এবং ডিভাইস ব্লাস্ট হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
স্মার্টফোনের ব্যাটারি জলের সংস্পর্শে এলে
যে সমস্ত ডিভাইস ওয়াটারপ্রুফ নয়, সেগুলি যদি জলের সংস্পর্শে আসে তবে ব্যাটারির বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
এক্সটারনাল সোর্স থেকে ড্যামেজ ঘটলে
ফোনের এক্সটারনাল কোনো আঘাত বা বাইরের কোনো জায়গা থেকে আঘাত থাকলে বা বেশি হিটের কাছাকাছি এলে ফোন ড্যামেজ হয় ব্লাস্ট হতে পারে।
কীভাবে মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ থেকে বাঁচবেন
ফোনের ব্যাটারি ব্লাস্ট হতে চলেছে কিনা তা জানা যায় ব্যাটারি সোয়েলিং হতে শুরু করলে, বা ব্যাটারি থেকে কোনো সাউন্ড বেরানো শুরু হলে। তবে ফোনে ফাস্ট পার্টি চার্জার ইউজ করলে, ওভার চার্জ না দিলে , সানলাইট বা জলের সামনাসামনি না আনলে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা কম থাকে।