গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ট্রান্সফারের জন্য বিখ্যাত মেসেজিং অ্যাপগুলি যে সুরক্ষিত নয় তা প্রায় সকলেই জানে। তবু কাজের দরকারে বা তারাহুরোতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আমরা পাঠিয়ে ফেলি WhatsApp, Telegram এর মতো মেসেজিং অ্যাপগুলি দিয়ে। আর এই ডেটা গুলিই এইসকল মেসেজিং অ্যাপের গাফিলতিতে লিক হয়ে যায় গোটা বিশ্বে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার থেকে এ বিষয় সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যেকড়া নির্দেশ দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
যোগাযোগের নতুন নিয়ম প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা কোনো গোপনীয় ডেটা WhatsApp, Telegram বা অন্য কোনো মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে পাঠাতে পারবেনা। এই সকল অ্যাপের সার্ভার গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। ফলে দেশের যেকোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বিপদ। ভারতের বিরোধী শক্তিগুলি কোনো গোপনীয় ডকুমেন্টস একবার যদি হাতে পেয়ে যায় তাহলে তার অপব্যবহার করতে তারা দুই বার ভাববেনা। কোভিড আসার পর অনেককেই বাড়ি থেকে কাজ করতে হয়।
এই Work from home এর ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, কর্মীরা শুধুমাত্র কোম্পানি থেকে দেওয়া সফটওয়্যার ইউজ করেই অফিসের কাজের জন্য নিজেদের বাড়ি থেকে যোগাযোগ স্থাপন করবে। কেন্দ্রীয় সরকার শুধু মেসেজিং অ্যাপেই নিষেধাজ্ঞা আনেনি, Amazon Alexa, Apple HomePod, Google Meet, Zoom ইত্যাদি এইসকল অ্যাপগুলিকেও সরকারি কাজের জন্য ব্যান করেছে তারা।
বিভিন্ন৷ রিসার্চের পর কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত গুলি নিয়েছে। রিসার্চ রিপোর্ট অনুযায়ী, এইসকল মেসেজিং অ্যাপ এর একাধিক গাফিলতি ও ত্রুটি রয়েছে মেসেজ প্রাইভেসির ক্ষেত্রে। বারংবার সরকারি ডকুমেন্টস ফাঁস হওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কর্মীরা নতুন এইসকল নিয়ম ঠিকঠাক না মেনে চললে হতে পারে কড়া শাস্তি।
নতুন এই নির্দেশিকায় আরো জানানো হয়েছে যে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা কোনো সেন্সেটিভ ডকুমেন্ট Work from home এর সময় বাড়ির অন্য কোনো ডিভাইস থেকে অফিসে পাঠাতে পারবেনা। এবং কাজ করার সময় অবশ্যই National Information Center (NIC) এর VPN কানেক্ট করে নিতে হবে নিজের ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে।
এর পাশাপাশি ন্যাশনাল ডিফেন্স বা অন্যান্য দেশ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ মিটিংগুলির সময় স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ,ট্যাবলেট বা কোনো রকম ইলেকট্রনিক ডিভাইস যার মাধ্যমে তথ্য ফাঁস হতে পারে এমন জিনিস ব্যবহার করা যাবেনা। সরাসরি নিষেধাজ্ঞা জাড়ি করা হয়েছে এইসকল ডিভাইসের উপর। শুধুমাত্র ফিজিকাল মিটিংয়ের উপরই নতুন নিয়ম নয়, যেহেতু এখন ভার্চুয়াল মিটিং-ই বেশি হয় তাই এই ভার্চুয়াল মিটিং এর রিস্ক ও কমাতে চায় সরকার। তাই বলা হয়েছে শুধুমাত্র C-DAC এর সেট আপ সিস্টেমেই যোগ হওয়া যাবে ভার্চুয়াল মিটিং এ। ভিডিও কনফারেন্সগুলিতে যোগ হতেও লাগবে পাসওয়ার্ড। এবং এইসকল মিটিং এর সময়ও কোনো রকম অন্য ডিভাইস এর ব্যবহার একেবারেই করা যাবেনা। বা সামনে রাখা যাবেনা।
বর্তমানে চারিদিকে যেভাবে দেশের শত্রু বাড়ছে তাতে একটি সামান্য ভুলেও হয়ে যেতে পারে বিশাল ক্ষতি। সেই রিস্কের ব্যাপারে বুঝতে পেরেই কেন্দ্র থেকে এতো কঠোর সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছে।